সে বাদাটা বড়ো বাড়িতে থেকে যায় অচল হয়ে/সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে

প্রশ্নঃ ‘সে বাদাটা বড়ো বাড়িতে থেকে যায় অচল হয়ে।’- কোন বাদার কথা বলা হয়েছে ? তা বড়ো বাড়িতেই বা অচল থাকে কেন ?

প্রশ্নঃ ‘সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে।’- কে, কীভাবে এই ভাত জোগাড় করল ? তার এই অনুভূতির কারণ ব্যাখ্যা করো ।


সে বাদাটা বড়ো বাড়িতে থেকে যায় অচল হয়ে/সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে





উত্তরঃ এখানে উচ্ছবের কথা বলা হয়েছে । বড়বাড়িতে বুড়ো কর্তার মৃত্যুর ফলে সমস্ত রান্না করা ভাত যখন বড় আড়িতে করে ফেলে দিতে যাচ্ছিল বাসিনী, তখন উচ্ছব সেই ‘ভাড়িটা’ নিজে ফেলে দেওয়ার কথা বলে সেটা নিয়ে দৌড়ে চলে আসে বড় বাড়ি থেকে ।

উৎসবের সবই ছিল। সাজানো সংসার, স্ত্রী সন্তান সবই ছিল কিন্তু বিধি বাম। যাদের কেউ নেই তাদের হয়তো ভগবান ও সব সময় রক্ষা করেন না। তাই এক ঝড়জলের রাতে সে হারিয়ে ফেলে তার স্ত্রী, সন্তানকে।

আমরা দেখি সর্বস্বান্ত হওয়া উচ্ছব একটু ভাতের জন্য কাঠ কাটতে আসে বড় বাড়িতে । সেখানে তান্ত্রিক ব্রাহ্মণ বিধান দিয়েছেন – যতসময় যজ্ঞ চলবে ততক্ষণ বাড়িতে কেউ কিছু খেতে পারবে না। উচ্ছবের ক্ষুধা উঠতে থাকে। তারপর পূজো শেষ হবার ঠিক পরেই রোগশয্যায় মুমূর্ষু কর্তা চোখ বোজেন। নতুন শাস্ত্রীয় বিধান জারি হয় – অশৌচের বাড়িতে যা কিছু রান্না করা খাবার – ফেলে দিতে হবে সব। স্বল্পবুদ্ধি উচ্ছব যখন বুঝে ফেলেদেওয়া হবে সব ভাত, তখন তার অন্তরাত্মা আহত আর হিংস্র হয়ে উঠে। ক্ষুধার্ত পেট তান্ত্রিকের রক্ত চক্ষুকে মানতে চায় না।

বাসিনীর কাছ থেকে প্রায় কেড়ে নিয়ে আসা ভাতের হাড়ি থেকে সে আকণ্ঠ ভাত খায় এবং নিরন্ন পেটে ভাতের ডেগ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ভাতে হাত ঢুকিয়ে সে যেন স্বর্গসুখ পায়। তার মনে হয় চন্নুনির মাও যেন তাকে জীবনে এত সুখ দিতে পারে নি।

0/Post a Comment/Comments